- শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
- সম্পাদকীয়:
আজ শোকাবহ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতি আজ স্মরণ করছে তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, যাদের হারিয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে চূড়ান্ত বিজয়ের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। একই সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করছে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের স্বজনদের প্রতি, যারা দীর্ঘ ৫১ বছর ধরে বয়ে চলেছেন আপনজনকে নির্মমভাবে হারানোর মর্মন্তুদ বেদনা ও কষ্ট। এই হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালালরা চেয়েছিল বাঙালী জাতীয়তাবাদ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যাতে এদেশে যথাযথভাবে বিকশিত না হয়।
যুদ্ধের শুরু থেকেই হানাদার বাহিনী যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সূচনা করেছিল, শেষদিকে এসে পরাজয়ের আগ মুহূর্তে তা রূপ নেয় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হানাদাররা তাদের এদেশীয় দোসর আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকারদের সহযোগিতায় বেছে বেছে হত্যা করেছিল শিক্ষক, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের। পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা চেয়েছিল স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাওয়া দেশটিকে মেধায়-মননে পঙ্গু করতে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এদেশের কিছু কুলাঙ্গারই বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে তুলে দিয়েছে পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনীর হাতে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজেরাই হত্যাযজ্ঞ সম্পন্ন করেছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, সে সব বিশ্বাস ঘাতক নরাধমের অনেকেই পঁচাত্তর পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজে পুনর্বাসিত হয়েছে। কেউ কেউ এমনকি মন্ত্রী হয়ে গাড়িতে উড়িয়েছে বাংলাদেশের পতাকা। পাকিস্তানি দুঃশাসনের দিনগুলোতে বরেণ্য সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন জাতির বিবেক।