
গাংনী সংবাদদাতা :-
০১/১০/২৫
মেহেরপুরের গাংনীতে বিসিআইসি ডিলারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয়েছে
সোমবার সন্ধ্যায় জুগিন্দা বাজারের প্রধান সড়কের পাশে সার সংকট নিরসন ও ধানখোলা ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের কথা জানান এলাকার কৃষকরা। লিখিত অভিযোগে উঠে আসে সার সংকট ও চড়া দামের কথা। লিখিত অভিযোগে চাষীর জানান, গাংনীতে প্রকৃত কৃষকদের ন্যায্য প্রাপ্য সার না দিয়ে বাইরের বাজারে পাচার, অধিক মুনাফা অর্জন এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারা করা হচ্ছে। এসময় এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নুর ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, বিসিআইসি ডিলার নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দাদের ডিলারশীপ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ধানখোলা ইউনিয়নের ডিলার দু’জনই গাংনী পৌরসভার বাসিন্দা। প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে- মেসার্স
N.R এন্টারপ্রাইজ যার প্রোপাইটার এনামুল হক। তিনি রাজনৈতিক সুবিধাভোগী। আরেকটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাদের স্টোর। যার প্রোপাইটার হারুন অর রশিদ, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেকের ভাইয়ের ছেলে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ডিলারশীপ পাওয়া এ দুই ব্যক্তির কেউই ধানখোলা ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা না। ইউনিয়নে তাদের কোনো স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সার সংরক্ষণের গুদাম নেই। ফলে কৃষকরা প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। লাইসেন্সের প্রধান শর্তই হচ্ছে স্ব স্ব ইউনিয়নে বিক্রিয় কেন্দ্র ও সার সংরক্ষণ গুদাম থাকতে হবে। তারা রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে গাংনী বসে ধানখোলা ইউনিয়নে সারের ডিলারশিপ চালিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষকদের দাবি, এন আর এন্টারপ্রাইজের মালিক এনামুল হক আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ডিলারশিপ ধরে রেখেছেন। তবে গত ৫ আগস্টের পর স্থানীয়রা জানতে পারেন তিনি ধানখোলা ইউনিয়নের সার ডিলার। সার নিতে গেলে কৃষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তিনি। এমনকি বিএনপির স্থানীয় নেতারা এ বিষয়ে কথা বললে এনামুল হক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে হুমকি দেন এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম
ব্যবহার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। প্রকৃত কৃষকদের সার না দিয়ে তারা ইউনিয়নের বাইরে পাচার করছেন এবং খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছেন। এতে ইউনিয়নের কৃষকরা ন্যায্য দামে সার পাচ্ছেন না, চাষাবাদের মৌসুমে পড়ছেন চরম আর্থিক চাপে বলে জানান কৃষকরা ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ডিলাররা কেউই আসলে কৃষকবান্ধব না, বরং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ সুবিধাভোগী। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারলে কৃষকদের স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে উক্ত দু’টি ডিলারশিপ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। স্থানীয়, যোগ্য ও কৃষকবান্ধব স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্য থেকে নতুন ডিলার নিয়োগ দিতে হবে। কৃষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এসময় বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত কৃষকদের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন।
সার সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ডিলার জানান, চলতি বছরে মেহেরপুর জেলায় যে পরিমাণ সার বরাদ্দ তারা পেয়েছেন তার চার ভাগের একভাগ মাত্র সরবরাহ পেয়েছেন। বরাদ্দ হচ্ছে কিন্তু সরকারিভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার পাচ্ছেন না। অন্যদিকে মেহেরপুর জেলায় সব সময় সারের প্রয়োজন বেশি। সেই পরিমাণ সার সরবরাহ না থাকায় সংকট দেখা দেয়।এ বিষয় জেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান কৃষকরা জেনো পর্যাপ্ত পরিমাণ সার পাই সেই ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে তিনি যোগাযোগ রাখছেন।