নিজস্ব প্রতিনিধি
০২/০৪/২৩

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ২ ভাই হত্যাকাণ্ডে ৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড। আদালত সূত্রে জানা যায় কাজিপুর সীমান্তে রফিকুল ইসলাম ভাই আবু জেল, দুই সহোদর ভাই হত্যা মামলায় ১৪ জন আসামীর মধ্যে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা - গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামতের ছেলে হালিম (৩৫), আছের উদ্দীনের ছেলে আতিয়ার (৪০), নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪০), মৃত দবীর উদ্দীনের ছেলে শরিফ (৪০) ও ফরিদ (৪৫), আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দীন (৪৩), আফেল উদ্দীনের ছেলে আজিজুল (৩৬), মুনছারের ছেলে মনি (২৫), নজির উদ্দীনের ছেলে দবির উদ্দীন (৩২)। এর মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বেকুসর খালাস প্রদান করেন তারা হলেন মামলায় ৫ আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকুসর খালাস প্রদান করেন।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজীপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ফেন্সিডিল উদ্ধার করে বিজিবি। বিজিবিকে ফেন্সিডিল ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেলের নামে। এ ঘটনায় ঐ দিন রাতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে মারধর করে আসামিগণ । তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রফিকুলকে উদ্ধার করে। ১৫ জুন রাত ১০ টার দিকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য ঐ দুই ভাইকে ডেকে নিয়ে যায় আসামিগণ । তারপর থেকেই ঐ দুইজনের আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। এদিন ভোর রাতে কাজীপুর গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত মেইন পিলার ১৪৫ এর সাব পিলারের ৬ এস এর পাশে ঐ দুই ভাইয়ের ক্ষত বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। তাদেরকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সীমান্তে মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছিল জানান পুলিশ । বোন জরিনা বেগম গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে তৎকালীন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের হাতে। ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১৪ জনকে আসামী করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তিনি। এ মামলায় তিন জন আসামী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকাক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।এই মামলায় ১৭ জনের সাক্ষির সাক্ষ্য প্রদান করে। বিজ্ঞ বিচারক এই মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। পাঁচজন কে বিকুলুস খালাস প্রদান করেন আদালত। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. কাজী শহীদুল হক, আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন অ্যাড. কামরুল ইসলাম, অ্যাড. এ.কে.এম শফিকুল আলম, অ্যাড. আতাউল গনি আন্টু। আসামির পক্ষের আইনজীবী বলেন ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চদালতে আদালতে আপিল করা হবে । এই রায় প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে আসামিদের আত্মীয়-স্বজনরা কান্নায় আদালতচক্র ভারী হয়ে ওঠে।